 – শোন তবে, এক যে ছিল মেয়ে, তার ছিল দুই ডানা।
 – শোন তবে, এক যে ছিল মেয়ে, তার ছিল দুই ডানা। কখন কিভাবে যেন পাখি হওয়ার বর পেয়েছিল সে,
 কখন কিভাবে যেন পাখি হওয়ার বর পেয়েছিল সে, যখন খুশি উড়তে পারত না দেখা ডানায় ভর করে
 যখন খুশি উড়তে পারত না দেখা ডানায় ভর করে কেউ জানতে পারত না।
 কেউ জানতে পারত না।
ডানাদুটো কেউ দেখতে পেত না বুঝি? লুকোনো থাকত?
 – তাছাড়া কি ? সেটাই তো বর পাওয়ার মজা।
 – তাছাড়া কি ? সেটাই তো বর পাওয়ার মজা।
 ভোর বেলা যখন ময়ূরকন্ঠী রঙের আকাশে লাল সুতোর আঁকিবুঁকি
 ভোর বেলা যখন ময়ূরকন্ঠী রঙের আকাশে লাল সুতোর আঁকিবুঁকি
 সে ঘুম থেকে উঠে দাঁড়াত ছাদের আলসে ধরে
 সে ঘুম থেকে উঠে দাঁড়াত ছাদের আলসে ধরে
 উড়ান দিত সবার অলক্ষ্যে
 উড়ান দিত সবার অলক্ষ্যে
 উড়ত যতক্ষণ না কেউ ডাক দেয়
 উড়ত যতক্ষণ না কেউ ডাক দেয়
 - হাঁ করে দাঁড়িয়ে আছিস যে বড়, কাজকর্ম নেই?
  - হাঁ করে দাঁড়িয়ে আছিস যে বড়, কাজকর্ম নেই?
 পাখি নেমে আসত ভুঁয়ে।
 পাখি নেমে আসত ভুঁয়ে।
 সারাদিন রান্নাঘরে ধোঁয়ার আলপনায় ঘামতে ঘামতে
 সারাদিন রান্নাঘরে ধোঁয়ার আলপনায় ঘামতে ঘামতে
 অফিসের ছোট্ট ঘরের দমবন্ধ দেওয়ালে
 অফিসের ছোট্ট ঘরের দমবন্ধ দেওয়ালে
 ভাঙা চুনবালির কারুকাজ দেখতে দেখতে
 ভাঙা চুনবালির কারুকাজ দেখতে দেখতে
 ভীড় বাসের অসহ্য গরমে এক অচেনা চেনা মুখ খুঁজতে খুঁজতে
 ভীড় বাসের অসহ্য গরমে এক অচেনা চেনা মুখ খুঁজতে খুঁজতে
 সে অদৃশ্য ডানা মেলে ঘুরে বেড়াত।
 সে অদৃশ্য ডানা মেলে ঘুরে বেড়াত।
তার খুব দুঃখ ছিল বুঝি মা?
 – দুঃখ কোথায় – তার তো ভীষণ সুখ।
 – দুঃখ কোথায় – তার তো ভীষণ সুখ।
 আকাশে উড়লে মানুষ ছোট্ট পুতুলের মত লাগে।
 আকাশে উড়লে মানুষ ছোট্ট পুতুলের মত লাগে।
 নীচের কর্কশ চিৎকার ফিসফিস কানাকানি
 নীচের কর্কশ চিৎকার ফিসফিস কানাকানি
 কিচ্ছু শুনতে পাওয়া যায় না।
 কিচ্ছু শুনতে পাওয়া যায় না।
 পাখির মনেই পড়ে না মাটিতে তার বাসার কথা।
 পাখির মনেই পড়ে না মাটিতে তার বাসার কথা।
তারপর কি হল মা?
 – তারপর… তারপর একদিন সবাই মিলে তাকে খুব বকলো
 – তারপর… তারপর একদিন সবাই মিলে তাকে খুব বকলো
 কেন সে থেকে থেকেই খাঁচার দরজা খুলে আকাশে উড়ে যায়?
 কেন সে থেকে থেকেই খাঁচার দরজা খুলে আকাশে উড়ে যায়?
 এটাতো নিয়ম নয়।
 এটাতো নিয়ম নয়।
 একটা বিরাট কাঁচি নিয়ে তার ডানাদুটো কেটে দিল ওরা।
 একটা বিরাট কাঁচি নিয়ে তার ডানাদুটো কেটে দিল ওরা।
 সে মেয়ে আর পাখি হতে পারত না।
 সে মেয়ে আর পাখি হতে পারত না।
তারপর – মা তারপর?
 – ডানাদুটো তুলে খুব যত্ন করে রেখে দিল সে।
 – ডানাদুটো তুলে খুব যত্ন করে রেখে দিল সে।
 মাঝে মাঝে রোদে দিত, যাতে মরচে না ধরে।
 মাঝে মাঝে রোদে দিত, যাতে মরচে না ধরে।
 তারপর তার ছোট্ট মেয়ে একদিন যখন তার আঁচল ধরে বসলো গল্প শুনতে,
 তারপর তার ছোট্ট মেয়ে একদিন যখন তার আঁচল ধরে বসলো গল্প শুনতে,
 আস্তে আস্তে ডানাদুটো বার করে তার পিঠে জুড়ে দিল।
 আস্তে আস্তে ডানাদুটো বার করে তার পিঠে জুড়ে দিল।
মেয়েটাও কি পাখি হয়ে গেল মা?
 – সে কথা তো তুমি বলবে মা!
 – সে কথা তো তুমি বলবে মা!
0 কমেন্ট:
Post a Comment
@123kobita: