ময়ূরী ভট্টাচার্য্য


অপারমিতা
চিলেকোঠার চড়াইটা তার সপসপে ভিজে ডানাতেও উষ্ণতা খোঁজে
যদিবা অন্ধকার ঘরে ঘুলঘুলির আলোতেই ভোর হয়
অপারমিতারা দূরে টুপটুপ জোনাকির সবুজ আলো হয়ে জ্বলে
জোনাকিদের ভালোবেসে পাগল সাঁতারু
হেমন্তের শীতভাঙা নদীতে ডুব দেয়
হয়ত, রাত থাকতে থাকতেই কারো মনে
কোথাও প্রেরণা জ্বলে উঠবে।

এক চিলতে
এতটুকুও ফাঁক রাখিনি
মধুকোড়ের তো পাত্র আছে
নিঃস্বের দুটো হাতই শুধু সম্বল
তোমার সামনে যদি উজাড় করি
আমায় করুণা কোরো না
রাশি রাশি চাই নি তো
যদি পারো দু-এক পশলা হেলায় দিও ফেলে
সুবর্ণরেখার জল ছেঁকে ছেঁকে স্বর্ণকণা জমায় যারা
তার চেয়েও যত্নে রাখতে পারি
তোমার মুখের এক কণা হাসি।

বিমুখ
তোমার অহেতুক নিষেধ আমি মানছি না শঙ্করপ্রসাদ
প্রচণ্ড খরার দিনেও আমি নদী সাঁতরেছি
তোমার নিষ্ঠুর অবহেলা আমায় ব্যথা দেয় না–
যত বেশি এড়িয়ে চল তুমি
জানি, নিজের অজান্তেই তত গ্রহণ কর আমায়।
নির্বাক সাক্ষাতেও ছুটি নেই তোমার;
তুমি জানো না, কে যেন অনর্গল
কথা বলেই চলে, নিভৃতে – তোমার সাথে।
সে তুমি যতই বিমুখ থাকো না কেন!

মায়া
তোমাকে কখনই কোমল মনে হয় নি।
বারবার খুঁজেছি – ধরা দাও নি।
আমার বিনিদ্র রাতে ছায়া হয়ে আসো নি কখনও।
আমার তপ্ত কপালে কখনও ক্ষমার হাত রাখো নি।
কিন্তু কী অদ্ভুত দেখো আজ অনেক দূর থেকে তোমাকে অন্যরূপে দেখছি।
তোমার কোমল গন্ধের শরীর মায়ার আঁচলে ঢেকে দিচ্ছে সব কিছু।
আমি হারিয়ে যাচ্ছি।